ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ বিএনপির ৪৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঝালকাঠিতে আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালন করেছে জেলা বিএনপির দুই অংশ। বুধবার সকালে শহরের ব্র্যাক মোড়ের একটি কমিউনিটি সেন্টারে একাংশ এবং শহরের আমতলা সড়কের একটি কার্যালয়ে অপর অংশ আলোচনা সভা ও দোয়া মিলাদের আয়োজন করে। দুটি অনুষ্ঠানেই নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে অংশ নেন।
আলাদা কর্মসূচিতে বক্তারা এক পক্ষ অপরপক্ষের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন। একই সময় পৃথক অনুষ্ঠান পালন করায় উভয় পক্ষই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। এর মাধ্যমে জেলা বিএনপির দ্বন্দ্ব আবারো প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে দলের নেতাকর্মীরা।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় শহরের ব্র্যাকমোড়ের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সৈয়দ হোসেন। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. শাহাদাত হোসেন, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বাক কমিটির সদস্য মনিরুল ইসলাম নুপুর, শহর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বাবুল, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাসিমুল হাসান, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম তালুকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াস সরদার দিপু। আলোচনা শেষে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি এলাকায় জেলা বিএনপির স্থায়ী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্ন।
এ সময় জেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে একই সময় শহরের আমতলা সড়কের একটি কার্যালয়ে জেলা বিএনপির অপর অংশ দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে। জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নূরুল আলম গিয়াসের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান খান বাপ্পি, কেন্দ্রীয় বাস্তহারা দলের আহ্বাক খন্দকার অহিদুল ইসলাম বাদল, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সরদার এনামুল হক এলিন, আনিসুর রহমান তাপু, আজাদুর রহমান ও যুবদল নেতা এনামুল হক সাজু। পরে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
উভয় সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন সংগ্রামে তৃণমূলের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার আহ্বান জানান জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বলেন, জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে যারা রাজনীতি শুরু করেছে, তাঁরা কখনোই দেশের মঙ্গল চায় না। দলের অপর অংশের নেতা জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বাস্তহারা দলের আহ্বায়ক খন্দকার অহিদুল ইসলাম বাদল বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে আমাদের রাখা হয়নি, এতেও কোন রাগ-ক্ষোভ নেই। কিন্তু দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানও তারা আমাদের জানায় না। জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করি, লালন করি। সুতরাং আমরাও আলাদা কর্মসূচি পালন করেছি।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম নুপুর বলেন, কেন্দ্র থেকে আহ্বায়ক কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্বেই দলের সকল কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দলের মধ্যে আমাদের কোন বিবেধ নেই। সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাদের সঙ্গেই আছেন। কয়েকজন এ কমিটি মানতে পারছেন না, তাঁরা আলাদা কর্মসূচি পালন করছেন। বিষয়টি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে জানানো হবে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা সবাইকে সম্পৃক্ত করেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এখানে আলাদা কর্মসূচি পালনের কোন প্রয়োজন ছিল না। যারা আলাদা কর্মসূচিতে ছিলেন, তারাই জানেন কেন করেছেন। আমাদের সঙ্গে দলের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আছেন এবং কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply